ঢাকা অফিস :
সপ্তাহ ঘুরতেই ডিমের হালি চড়েছে ৫০ টাকায়, মাস ঘুরার মধ্যে পেঁয়াজের কেজি বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষজন। এমন অবস্থায় স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার কমানো হচ্ছে, ডিমও আগের মতো খাওয়া হচ্ছে না। একইসঙ্গে বাজারের চড়া দামের কারণে একদিকে যেমন ক্রেতারা হতাশ, তেমনি প্রোটিনের জন্য হয়ে পড়েছে এক চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাভাবিকের তুলনায় ক্রেতারা পেঁয়াজ ও ডিম কম কিনছেন। রাজধানীর মিরপুর এলাকার খুচরা দোকানিরা জানান, গত মাসের শুরুতে পেঁয়াজের কেজি ৬০–৬৫ টাকায় পাওয়া যেত, এখন ৮০–৮৫ টাকা। ক্রেতারা এখন প্রয়োজন ছাড়া পেঁয়াজ কম কিনছেন। ডিমের দামও বেড়ে যাওয়ায় তাদের ক্রয় ক্ষমতা সীমিত। এমন পরিস্থিতিতে দোকানিরা বলছেন, সরবরাহ ঘাটতি ও সিন্ডিকেটের কারসাজি দাম বাড়ানোর মূল কারণ।
আর সাম্প্রতিক সময়ে কেনাকাটাও আগের তুলনায় কমাতে হয়েছে উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম রবিউল নামের আরেক ক্রেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে এমন ঊর্ধ্বগতি দেশের মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে। সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং সিন্ডিকেটের কার্যক্রমে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। এতে স্বাভাবিক চাহিদা অনুযায়ী দাম ঠিক রাখা কঠিন হচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজ ও ডিমের চড়া দামের কারণে এখন প্রতিটি কেজি, প্রতিটি হালি বিবেচনা করতে হচ্ছে।
ঢাকার পল্লবী, মোহাম্মদপুর, বনানী ও তেজগাঁও এলাকার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্রেতাই এখন আগের মতো সপ্তাহে দুই কেজি পেঁয়াজ কেনার পরিবর্তে ১ কেজি বা আধা কেজি কেনা হচ্ছে। ডিমের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। বিশেষ করে ছোট পরিবারগুলোতে খরচ সামলাতে কেনাকাটা আরও সীমিত করা হয়েছে।
ভোক্তারা মনে করছেন, দাম বাড়ানোর ফলে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের পরিবারে ডিম কম খাওয়া হচ্ছে, কারণ তারা প্রতিদিন ডিম কিনে রাখতে পারছে না। পেঁয়াজও কম ব্যবহার হচ্ছে, ফলে স্বাভাবিক রান্নার স্বাদ সীমিত হচ্ছে। এতে পরিবারের খাবারের মান ও পুষ্টিতেও প্রভাব পড়ছে।
বাজারে দোকানিরাও স্বীকার করছেন, ক্রেতারা এখন কম কিনছেন। দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা আগের তুলনায় অর্ধেক পরিমাণ পেঁয়াজ ও ডিম কিনছেন। এটা আমাদেরও উদ্বেগের বিষয় বলেও মন্তব্য করেছেন খুচরা দোকানদাররা।
এদিকে বাজারে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। গত ১২ আগস্ট বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘যে দেশে সস্তায় পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।’