এডিশন ডেস্কঃ
মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প। সাড়ে ১৭ একর আয়তনের এই বিহারিপল্লির ৩০টি পয়েন্টে নির্বিঘ্নে মুড়ি-মুড়কির মতো বিক্রি হয় ইয়াবা-হেরোইন, গাঁজা-ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক। এই অবৈধ ব্যবসায় বছরে লেনদেন হয় দেড়শ কোটি টাকার বেশি। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় আগে দুই গডফাদার ক্যাম্পের মাদক ব্যবসার নেতৃত্ব দিতেন। তাদের মৃত্যুর পর এখন ক্যাম্পে তৎপর ছোট-বড় এক ডজন ‘মাদক গডফাদার’। তাদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৫ শতাধিক খুচরা বিক্রেতা। মাদক ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে প্রায় ঘটছে সংঘর্ষ। গত এক বছরে নিহত হয়েছেন ৮ জন, আহত অসংখ্য। বছরের পর বছর এই মাদক কারবার চললেও রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন কার্যত নির্বিকার। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই চিহ্নিত গডফাদাররা থাকেন অধরা। আর কেউ যদি ধরাও পড়েন দুর্বল এজাহারের কারণে আদালত থেকে সহজেই জামিনে বেরিয়ে আসেন। আবার পুরোদমে সক্রিয় হন মাদক ব্যবসায়। যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আরও জানা গেছে, আর্থিক প্রলোভনে ক্যাম্পের তরুণ-তরুণীদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মাদক এবং দেহ ব্যবসার মতো অনৈতিক কাজে। মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে অস্ত্র ব্যবসায়ী, কিশোর গ্যাং, ছিনতাই চক্রসহ প্রায় দেড় হাজার অপরাধী। তারা বিষিয়ে তুলছে ক্যাম্পের ৫০ হাজার মানুষের জীবনযাত্রা। তাদের অভিযোগ-স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করার কারণে যুবসমাজকে ধ্বংস করার প্রধান মাধ্যম-এই মাদক ব্যবসা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। শুরুর আগেই অভিযানের খবর পৌঁছে যায় গডফাদারদের কাছে। কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ক্যাম্প থেকে এই অবৈধ ব্যবসা নির্মূল করা ২৪ ঘণ্টার ব্যাপার। অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্যাম্পের ৯টি সেক্টরের ৩০টি পয়েন্টে দিন-রাত মাদকের বেচাবিক্রি চলে। খুচরা বিক্রেতারা মাদক হাতে দাঁড়িয়ে থাকে গলির মুখে। ক্রেতা এলেই হাঁকডাক, দরকষাকষি চলে। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই এরা মিলিয়ে যায় অন্ধকার গলিতে। সূত্রমতে, ক্যাম্পে গড়ে দিনে ৪৪ লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়।মাসে প্রায় ১৩ কোটি টাকা এবং বছরে অঙ্কটা দাঁড়ায় দেড়শ কোটি টাকারও বেশি।
জানতে চাইলে অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘জেনেভা ক্যাম্পের অপরাধ প্রবণতা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয় নয়, বরং সামাজিক সংকটও দায়ী। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষার অভাব তাদের অপরাধের পথে ঠেলে দিয়েছে। টানা অভিযান ও শক্তিশালী চার্জশিটের পাশাপাশি পুনর্বাসন ছাড়া এই দুষ্টচক্র ভাঙা যাবে না।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান বলেন, আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারা পরে জামিনে বেরিয়ে এসে আবার তৎপর হয়ে উঠে। তবে জামিনে বেরিয়ে আসা প্রসঙ্গে ঢাকার চিফ মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ সামছুদ্দোহা সুমন বলেন, মামলার ত্রুটিপূর্ণ এজাহার, আটকের পর আগের কোনো মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ নানা কারণে মাদক মামলা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে আইনি ফাঁক-ফোকরে সহজেই জামিন পায় অপরাধীরা। এছাড়া মামলা চলাকালে সাক্ষী খুঁজে না পাওয়ায় অনেক মাদক মামলার আসামি পার পেয়ে যায়। চূড়ান্তভাবে তারা শাস্তি পায় না।
এক সময় মাদকের দুই গডফাদার ইশতিয়াক ও নাদিম ওরফে পঁচিশ এই ক্যাম্পে মাদকের সাম্রাজ্য চালাতেন। তাদেরকে শেল্টার দিতেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নুর ইসলাম রাস্টন। নাদিম ২০১৮ সালে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এবং ইশতিয়াক করোনায় ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর তাদের উত্তরসূরিরা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে তৎপরতা চালায়। তাদের মধ্যে বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, পিচ্চি রাজা, সৈয়দপুরিয়া বাবু (গ্রেফতার), টুনটুন, উলটা সালাম, হেরোইন সীমা, ইমতিয়াজ, পাকিস্তানি রাজুসহ ১২ জন ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায় সক্রিয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে তারা নানক-রাস্টনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মাদকের রমরমা ব্যবসা চালান। পটপরিবর্তনের পর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারা জড়িয়ে পড়ে হানাহানি-খুনাখুনিতে। থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তারা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ায়। বিশেষ করে পিচ্চি রাজার গ্রুপ ও ভূঁইয়া সোহেল গ্রুপের মধ্যে আধিপত্যের লড়াই চলতে থাকে। এতে গত এক বছরে আটজন নিহত ও আহত হয়েছেন অসংখ্য।
২৪ আগস্ট। বেলা ৩টা ৩০ মিনিট। জেনেভা ক্যাম্পের এ-ব্লকের পাশে দাঁড়ানো সুঠামদেহী এক যুবকের কাছে গিয়ে হাঁক দিল তিন কিশোর। মামা কটা লাগবে? ইয়াবা চান নাকি হেরোইন? তিনি দরকষাকষি করে ৪ পিস ইয়াবা কিনলেন ৮০০ টাকায়। তিনি চলে গেলে নিজের পরিচয় গোপন করে ক্রেতা সেজে এই প্রতিবেদকের কথা হয় সেলসম্যান জীবনের সঙ্গে। তিনি (জীবন) জানান, ‘প্রতি পিস বিক্রিতে তার কমিশন থাকে ৪০ টাকা। দিনে গড়ে ৩০-৪০ পিস বিক্রি করেন। তিনি ফোন নাম্বার দিয়ে বললেন, পাইকারি-খুচরা সব ব্যবস্থা আছে। যোগাযোগ কইরেন।’ আরেক মাদক বিক্রেতা কোরবানের দাবি, তিন বছর ধরে তিনি মাদক বিক্রি করেন। ইয়াবার নেশায় জড়িয়ে ধীরে ধীরে তিনি এই পথে পা বাড়ান। দিনে তিন-চারটা ইয়াবা সেবন করেন। প্রতিদিন তিনি বিক্রি করেন ৪০-৪৫টি। যারা আসে সর্বনিম্ন চার পিস করে কেনে। সন্ধ্যা নামতেই হুমায়ুন রোড, এসপিজিআরসি গলি, ডাস্টবিন গলি, সবখানেই দেখা যায় কিশোররা ‘হকারদের মতো হাঁকডাক’ দিয়ে ক্রেতা টানছে। কেউ গেলে তিন-চারজন মিলে তাকে ঘিরে ধরছে। মাদক বিক্রেতারা জানিয়েছে, ক্যাম্পে ইয়াবার চেয়ে হেরোইনের ব্যবসা বেশি জমানোর চেষ্টা চলছে।
ক্যাম্পে বুনিয়া সোহেল গ্রুপ হেরোইন ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করেছে। এই গ্রুপে সক্রিয় আকরাম, রানা, রাজন, টুনটুনসহ অন্তত এক ডজন মাদক কারবারি। চুয়া সেলিম ইয়াবা ও হেরোইনের প্রধান নিয়ন্ত্রক। তার গ্রুপে আছে উলটা সালাম, সোহেল কসাই, গাল কাটা মনু, কালা ইমরানসহ অনেকেই। ইয়াবা ব্যবসায়ী পিচ্চি রাজা আগে চুয়া সেলিমের অনুসারী হলেও এখন নিজেই গ্রুপ গড়ে তুলেছে, যেখানে জড়ো হয়েছে ক্যাম্পের কিছু যুবক ও কিশোর অপরাধী। এছাড়া ইশতিয়াকের বোন জামাই পিস্তল নাঈমের আলাদা সিন্ডিকেট রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী শান্নু শান্তি বাহিনী নামে আরেকটি গ্রুপ গড়ে তুলেছে ক্যাম্পে। শান্তিবাহিনী শেল্টার দিচ্ছে সৈয়দপুরিয়া বাবু গ্রুপ এবং বুনিয়া সোহেল গ্রুপকে। চুয়া সেলিমের ইয়াবার বড় স্পট হলো-ক্যাম্পের ১ নম্বর সেক্টরে বেলালের গলি, দুই, চার ও আট নম্বর সেক্টর এলাকা। চুয়া সেলিম গ্রুপের হয়ে ক্যাম্পে ইয়াবা ও হেরোইন ব্যবসা চালাচ্ছে-উলটা সালাম, সনু, সোহেল কসাই, গাল কাটা মনু, কালা ইমরান, আরমান, আকরাম, গেইল হীরা, শান্ত, ফাট্টা আবিদ, পিস্তল নাঈম, শাহজাদা, জিন্দা রনি, কামাল, বাবু, নওশাদ, ইরফান, আজম, তানভীর, জাভেদ, গোলাম, শাহীদ ও রব্বানী। স্কুলের গলি, ডাস্টবিন গলি, ফার্মেসির সামনে-সবখানেই রয়েছে তাদের প্রভাব।
পিচ্চি রাজার নিয়ন্ত্রণে ২ নম্বর সেক্টরে শাকিল বুকসের সামনে ইয়াবা ও গাঁজার স্পট। ১ নম্বর সেক্টরে মাদকের আধিপত্য পিচ্চি রাজার। ক্যাম্পে হেরোইন ব্যবসায় বুনিয়া সোহেলের একক আধিপত্য সাত নম্বর সেক্টরে। তার হয়ে কাজ করছে আকরাম, নাদিম, টুনটুন, রানা, মোক্তার লালা, রাজন ওরফে কালু, কলিম জাম্বু, মোহাম্মদ আলী, আহম্মদ আলী ও আরিফ। আলফালা মেডিকেল রোডে তাদের সিন্ডিকেটের প্রকাশ্য কারবার চলে। টুনটুন বুনিয়া সোহেল ভাই। সাত নম্বর সেক্টরের আলফালা মেডিকেল এলাকায় হেরোইন-ইয়াবার স্পট নিয়ন্ত্রণ করছে বুনিয়া সোহেল গ্রুপ। ৩নং সেক্টরে এনএলজে হাইস্কুল গেট এলাকায় হেরোইন ও গাঁজার স্পট নিয়ন্ত্রণ করে সৈয়দ পুরিয়া বাবু (গ্রেফতার) গ্রুপ, ৫ নম্বর সেক্টরে জয়নালের হোটেলের সামনে ইয়াবা ও হেরোইন স্পট চালায় গলাকাটা মনু, ৩ নম্বর সেক্টরে শিকরার গলি এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে সগির গোখড়া, ৪ নম্বর সেক্টরে গলাকাটা গলিতে হেরোইন ও গাঁজার স্পট নিয়ন্ত্রণ করে কিলার আকরাম, সেক্টর ৪ ও ৫ নম্বরে হুমায়ুন রোড এলাকায় গাঁজা ইয়াবা হেরোইন বিক্রি করে জামসেদসহ আরও কয়েকজন। মাদকের আরেক পার্টনার মনু ও ইমতিয়াজ।
মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যাম্পে অন্তত ১০টি খুপরি ঘর ব্যবহার করা হচ্ছে মিনি বার হিসাবে। ভূঁইয়া সোহেল ৭ নম্বর ক্যাম্পে ৫টি মিনি বার এবং ১টি টর্চার সেল গড়ে তুলেছে। এখানে তার ঘনিষ্ঠজনরা বসে মাদক সেবন করে। পিচ্চি রাজার ১ নম্বর ক্যাম্পে রয়েছে চারটি মিনি বার। এভাবে প্রত্যেক মাদক ব্যবসায়ীর একাধিক মিনি বার রয়েছে। এসব বারে সুন্দরী তরুণীদের বাধ্য করা হয় যৌন ব্যবসায়। অর্থ ও আধিপত্যের এই খেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিরীহ পরিবারগুলো। এক নারী অভিযোগ করে বলেন, এখন মেয়েদের সম্ভ্রম বাঁচানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।
জেনেভা ক্যাম্পে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এরপরও পুলিশের প্রতি বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। তাদের দাবি, পুলিশ চাইলে একদিনে ক্যাম্পের মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের ক্যাম্পে ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছে। একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, পুলিশ অভিযান করতে আসার আগেই সোর্সের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়া হয়। মাদকে সয়লাব হওয়া ক্যাম্পের বাসিন্দারা তাদের পরিবার সন্তান নিয়ে উদ্বিগ্ন। এক অভিভাবক বলেন, ছেলেটাকে স্কুলে দিতে পারলাম না, এখন সে ইয়াবা বেচে। না খেলে মরবে, তাই বাধ্য হয়ে এই পথে নেমেছে। এক দর্জি দোকানি জানান, ক্যাম্পের অধিকাংশ মানুষ শান্তিপ্রিয়, কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীরা এসব মানুষকে বিষিয়ে তুলছে। মাদকের গডফাদাররা কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। এদেরকে না ধরে পুলিশ ধরে খুচরা বিক্রেতাকে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, গত এক বছরে জেনেভা ক্যাম্পে চার শতাধিক মামলা হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে প্রায় দুই হাজার। কিন্তু বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, পিচ্চি রাজাদের মতো মাদক গডফাদাররা গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও সক্রিয় ক্যাম্পে। গত বছরের ১ নভেম্বর সিলেট থেকে র্যাব বুনিয়া সোহেলকে গ্রেফতার করে। রোজার ঈদের আগে সে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। অথচ বুনিয়া সোহেলের বিরুদ্ধে মাদক, হত্যাসহ ৪০টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয় মাদক সম্রাট পিচ্চি রাজা। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ডজনখানেক মামলা। সেও জামিনে বেরিয়ে এসে তৎপরতা চালাচ্ছে ক্যাম্পে। ৮ জানুয়ারি ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে থেকে চুয়া সেলিমকে গ্রেফতার করে র্যাব। সেও ৪ মাস আগে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। তার নামেও রয়েছে, হত্যা, মাদকসহ ৩৭টি মামলা। এছাড়া মাদকের প্রত্যেক গডফাদারের নামেই রয়েছে ১০ এর অধিক মামলা। মামলার পাহাড় মাথায় নিয়েই এরা ক্যাম্পে তৎপর রয়েছে। ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা চালালেও গডফাদাররা থাকে ক্যাম্পের বাইরে। তারা প্রতিদিন বস্তা ভরে মাদক বিক্রির টাকা ক্যাম্প থেকে নিয়ে যায়। সম্প্রতি একটি ফার্মেসি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চার বস্তা নগদ টাকা জব্দ করে। পরে তারা জানতে পারেন এই টাকা বুনিয়া সোহেলের মাদক বিক্রির। এই টাকা দিয়ে গডফাদাররা রাজধানীর বাইরে জমি-ফ্ল্যাট কিনছে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।
অভিযোগের বিষয়ে মাদকের গডফাদার ভূঁইয়া সোহেল, চুয়া সেলিম এবং পিচ্চি রাজার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তাদের নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।