খুলনা এডিশন::
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-১৩ আসনের মহিলা বিভাগের রুকন বোনদের অংশগ্রহণে এক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সম্মানিত আমীর জননেতা মোঃ সেলিম উদ্দিন।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা মোঃ মোবারক হোসাইন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা-১৩ আসনের নির্বাচন পরিচালক মোঃ শফিউর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ আব্দুল আউয়াল আজম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মোঃ রেজাউল করিম, এবং মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মোঃ জিয়াউল হাসান।
এছাড়াও মোহাম্মদপুর জোনের টিম সদস্য, থানা আমীর, জোন ও থানা পর্যায়ের মহিলা বিভাগের দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক রুকন বোন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি জননেতা মোঃ সেলিম উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন— নির্বাচন আমাদের জন্য কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞ নয়; এটি একটি পবিত্র আমানত ও দায়িত্ব। ইসলামী আন্দোলনের সৈনিক হিসেবে প্রত্যেক রুকন বোনের কর্তব্য হলো এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। আমাদেরকে বাইয়াতের অঙ্গীকার অনুযায়ী সময়, শ্রম ও আর্থিক কোরবানির মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন— নারীরা সমাজের অর্ধেক শক্তি। এই শক্তিকে সংগঠিত করে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
জননেতা সেলিম উদ্দিন বলেন— ঢাকা-১৩ আসনের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে মহিলা বিভাগের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে হবে। রুকন বোনদের দায়িত্ব শুধু সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—নারী সমাজের হৃদয়ে ইসলামী আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের প্রধান দায়িত্ব।
তিনি উপস্থিত রুকন বোনদের উদ্দেশে আহ্বান জানান—দাঁড়িপাল্লা শুধু একটি প্রতীক নয়; এটি ন্যায়, সমতা ও ইসলামী আদর্শের প্রতীক। এই প্রতীকের বিজয়ের মাধ্যমে একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
প্রধান বক্তা জননেতা মোঃ মোবারক হোসাইন তাঁর বক্তব্যে বলেন—আগামী নভেম্বর মাসে গণভোট এবং তার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে—এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান অংশগ্রহণকারী সকল স্টেকহোল্ডারদের দাবি এবং জনগণের ন্যায় সংঘত অধিকার।
তিনি বলেন— সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ এবং লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণই রাষ্ট্রের মালিক—তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা সেই অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে রয়েছি।
জননেতা মোবারক হোসাইন আরও বলেন—ঢাকা-১৩ আসনসহ সারাদেশে জামায়াতের প্রার্থীরা জনগণের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। মাঠপর্যায়ে ভোটার সংযোগ, গণসংযোগ ও প্রচারণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে। প্রতিটি রুকন বোন নিজ এলাকায় নারী ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ইসলামী আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেবেন।
তিনি বলেন—আমরা বিশ্বাস করি, ইসলামী আদর্শভিত্তিক রাজনীতি ছাড়া ন্যায়, ইনসাফ ও শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই দাঁড়িপাল্লার বিজয় মানে শুধু একটি দলের বিজয় নয়; এটি ন্যায় ও ইনসাফের বিজয়।
তিনি সকল রুকন বোনকে আহ্বান জানান—সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা, শৃঙ্খলা ও ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। সময় ও শ্রমের পাশাপাশি দোয়া, আত্মত্যাগ ও সংযমের মাধ্যমেই আল্লাহ আমাদের বিজয় দান করবেন।
কর্মশালায় নির্বাচনী প্রচারণায় মহিলা রুকনদের ভূমিকা, ভোটার সংযোগ, প্রচারণার কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিবাচক প্রচার এবং নারী ভোটারদের মাঝে ইসলামী আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। উপস্থিত সবাই ইসলামী আন্দোলনের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নির্বাচনী কার্যক্রমে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।