খুলনা এডিশন::
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মীরগাং গ্রামের দীনমজুর জঙ্গল ভাঙ্গি ও তার পরিবার ধনাঢ্য দিলীপ গাইন ও রঘুনাথ গং-এর মিথ্যা মামলার হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দরবন বাজারে এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রিয়াংকা ভাঙ্গি, জঙ্গল ভাঙ্গি, বাটুল বাবু, কেশব বাবু, জব্বার গাজী, আলমগীর গাজী, মিজানুর মোড়ল ও সিরাজুল ইসলামসহ অনেকে। বক্তারা অভিযোগ করেন, জঙ্গলের মা পাচিবালা ১৯৯৪ সালে সরকারের কাছ থেকে তিন বিঘা জমি বন্দোবস্ত পান। মাঠ জরিপের রেকর্ড, মিউটেশন ও খাজনা রশিদ সবই তার নামে রয়েছে। তবু এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি তপন, দিলীপ ও কমলেশ গাইন ওই জমিসহ প্রায় ৭০-৮০ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল একাধিকবার সালিশ করলেও সমাধান হয়নি। পরে পাচিবালার উত্তরসূরি জঙ্গল ভাঙ্গি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুনের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে জমির মালিকানা ও দখল পাওয়া নিশ্চিত হলে ভূমি কর্মকর্তা জমির দখল বুঝিয়ে দেন।
কিন্তু গত ১৯ অক্টোবর প্রিয়াঙ্কা ভাঙ্গি ও তার পরিবার জমিতে নেট জাল দিয়ে ঘের দেওয়ার পর রাতের আঁধারে দিলীপ গাইন ও তার সহযোগী রঘুনাথ তাদের রান্নাঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠে। পরে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই শ্যামনগর থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। নয় দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে তারা আবারও নতুন মামলার হুমকি পাচ্ছেন বলে দাবি করেন।
অভিযোগ রয়েছে, রঘুনাথ নিজেকে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ ও হিন্দু যুব পরিষদ, জেলা মন্দির সমিতির নেতা পরিচয় দিয়ে উল্টো মামলার পক্ষকে প্রভাবিত করছেন। গত ৩১ অক্টোবর সাতক্ষীরা রাজ্জাক পার্কে উক্ত সংগঠনগুলোর ব্যানারে জঙ্গল ভাঙ্গির বিরুদ্ধে মানববন্ধনও অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “দুই পক্ষই হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও অর্থ ও প্রভাবের কারণে রঘুনাথগণ ধনাঢ্য দিলীপ গাইনের পক্ষ নিয়েছেন।”
তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যকর ব্যবস্থা কামনা করেছেন।