খুলনা এডিশন::
খুলনার পাইকগাছায় শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে অভিযোগ দায়ের সহ দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি সম্পাদক সহ অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হয়রানি করতে প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার খান প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর হয়রানিমূলক অভিযোগ করেছেন।
তদন্তের সময় বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ শিক্ষকের মতামত বা সাক্ষ্য কে উপেক্ষা করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা নিয়ে ও নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বলে বলছেন প্রধান শিক্ষকরা।
বিষয় টি প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায় ও নুরুজ্জামান কে জড়িয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের অভিযোগ করেছেন ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকরা।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও প্রধান শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে মধুখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার খান সহ ৩ জন শিক্ষক ৪-০৭-২০২৫ তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায় ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক কপিলমুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান সহ একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ করেন। এদিকে সংশ্লিষ্ট এ অভিযোগ নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে অভিযোগকারী শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করা নিয়ে মূল অভিযোগ কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রধান শিক্ষকদের শিক্ষকদের অনেকেই বলছেন অভিযোগকারী হিসেবে অভিযোগে ৩ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন।
যার মধ্যে পারিশামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল এবং প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র মন্ডল অবসরপ্রাপ্ত এবং তদন্তের সময় তিনি হাজির ছিলেন না।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন উপজেলায় মোট ১৬৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ টি স্কুলে পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক রয়েছে। বাকি স্কুল গুলো চলছে চলতি দ্বায়িত্ব এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে।
অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সহ ১০৭ জন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত পূর্ব বিরোধ কে কেন্দ্র করে হয়রানিমূলক এ অভিযোগ করা হয়েছে এবং যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায়। তিনি বলেন বেশ আগে প্রধান শিক্ষক চলতি দায়িত্ব জিএম মিজানুর রহমান উপজেলা শিক্ষা অফিসে আমাকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় ওই সময় সে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়। পরে চাকরি ফিরে পেয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যার অংশ হিসেবে প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার খানের মাধ্যমে হয়রানি মূলক এ অভিযোগ করেছে। তদন্তের সময় ও বাবুল আক্তারের সাথে মিজান ও উপস্থিত ছিল। ঘোষাল বান্দিকাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন ৪-৯-২০২৫ তারিখে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অভিযোগের তদন্ত করেন। তদন্তের সময় আমরা ৬০ থেকে ৭০ জন অবসরপ্রাপ্ত সহ প্রধান শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সহ অন্যান্য কোন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ রায় ও নুরুজ্জামানের সাথে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি বলে তদন্ত কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে জানিয়েছি। প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম বলেন অভিযোগে আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বিষয়টি তদন্ত কমিটির নিকট লিখিত ভাবে জানিয়েছি। উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বলেন প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার একজন বিশৃঙ্খলাকারী শিক্ষক। তিনি বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে আসছে। তার হয়রানি মূলক কর্মকান্ডে শিক্ষকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ২০১৫ সালের পে- স্কেলের মাধ্যমে টাইমস্কেল প্রথা রহিত করা হয়েছে এবং ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত ব্যাপারে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি মর্মে নুন্যতম ৫০ জন প্রধান শিক্ষক লিখিতভাবে তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষকের মতামত ও সাক্ষ্য কে উপেক্ষা করে দুই একজন শিক্ষকের কথার উপর ভিত্তি করে তদন্ত কমিটি আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তা পুনরায় যাচাই-বাছাই সহ পুনঃ তদন্তের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনার উপ পরিচালক মহোদয় কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। বিষয় টি নিয়ে প্রতিপক্ষ কুচক্রী মহল সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ সহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান এবং যারা শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে অভিযোগ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকরা। এ প্রসঙ্গে স্বাক্ষর জাল করার বিষয় টি অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার খান।