খুলনা এডিশন::
উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছার সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ইখালীতে ১কোটি সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হচ্ছে দুর্যোগ রক্ষা বাঁধ। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৩৫ ভাগ কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আগামী মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বাস্তবায়নকারী সংস্থা। কাজ শেষ হলে গড়ইখালী সহ কয়েকটি ইউনিয়ন ভাঙ্গন ও প্লাবিত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে এবং হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল ও মৎস্য সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করছেন সবাই। এ বাঁধের কারণে স্বস্তিতে রয়েছে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় এ জনপদের মানুষ।
জেলার দুর্যোগের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা উপজেলা গুলোর মধ্যে পাইকগাছা অন্যতম। আর উপজেলার ঝুঁকিতে থাকা ইউনিয়ন হচ্ছে গড়ইখালী।
সুন্দরবন সংলগ্ন এ ইউনিয়ন টি প্রতিবছর দুর্যোগের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘুর্ণিঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসের প্রথম ভিকটিম হয় গড়ইখালী। বিশেষ করে টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় শিবসা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্রতিবছর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গড়ইখালী বাজার আবাসন এলাকা থেকে গাংরখী বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ খুবই দুর্বল এবং ক্ষুদখালী এলাকায় রয়েছে দীর্ঘদিনের ভাঙ্গন। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাঁধের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙ্গন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।
দুর্যোগ ঝুঁকি হৃাস কমিউনিটি সম্পদ সৃষ্টি প্রকল্পের আওতায় গড়ইখালীর ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের ক্ষুদখালী কানু বাবুর বাড়ির হতে গাংরখী বাজার পর্যন্ত ২ হাজার ১৫ মিটার ওয়াপদার রাস্তা সংস্কার এবং ইটের কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের বরাদ্দকৃত চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৬ টাকা। প্রকল্পের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা করছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। বাস্তবায়ন করছে গড়ইখালী ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগী সংস্থা হিসেবে রয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশিলন। সংস্থার কাজ করছে কয়রার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাব্বী এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ৩৫ ভাগ কাজ শেষ করেছে।
বর্তমানে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। চলমান এ কাজ পরিদর্শন করেছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধি, পরিচালক স্চ্ছিদানন্দ বিশ্বাস, ডিআরআর কো অর্ডিনেটর ইমরান হোসেন, মিল্কো খালিদ মাহমুদ, কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার আয়ুব আলী সহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পিইসি কমিটির সদস্য বৃন্দ। পরিদর্শন শেষে কাজের অগ্রগতি সন্তোষ জনক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যেভাবে কাজ এগিয়ে চলছে তাতে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদার আফজাল হোসেন।
সংস্কার কাজ শেষ হলে দুর্যোগের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে আসবে এবং গড়ইখালী, লস্কর, চাঁদখালী ও আমাদি সহ কয়েকটি ইউনিয়ন দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এবং হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল ও মৎস্য সম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন গড়ইখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু। বাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করার পর এলাকার মানুষ স্বস্তিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি।