1. khulnaedition@gmail.com : Khulna Edition : Khulna Edition
  2. md.ahsanulrobiul@gmail.com : Ahsanul Islam : Ahsanul Islam
  3. hasanur321@gmail.com : হাসানুর রহমান : হাসানুর রহমান
  4. habibullahbhola467@gmail.com : মোঃ হাবিবুল্লাহ : মোঃ হাবিবুল্লাহ
  5. imranbinrabiul@gmail.com : Md Imran Nazir : Md Imran Nazir
  6. mizan070301@gmail.com : মোঃ মিজানুর রহমান : মোঃ মিজানুর রহমান
  7. mahedihasananas@gmail.com : Mahedi Hasan Anas : Mahedi Hasan Anas
  8. zakirnet@yahoo.com : SM ZAKIR Hossain : SM ZAKIR Hossain
  9. admin@www.khulnaedition.com : খুলনা এডিশন :
  10. zaberhosen1143@gmail.com : মোঃ জাবের হোসেন : মোঃ জাবের হোসেন
সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে তাহিরপুরের মৎস্যজীবিরা চলতি নদীতে বড়শি দিয়ে মৎস্য আহরণে বাঁধা,লিখিত অভিযোগ দায়ের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শামসুর রহমান এর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল  পাইকগাছার চাঁদখালীতে এ্যাড মোমরেজুল ইসলামের গণসংযোগ ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ  জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের বাগআঁচড়া শাখার নবগঠিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা যশোর সদর হাসপাতাল থেকে মহিলা পকেটমার আটক শ্যামনগরে সিসিডিবির  জলবায়ু সহনশীল কমিটি গঠন  গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে ৩ জন নিহত ১১ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস ডা: জাকির নায়েকের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে ভারতের মন্তব্যের জবাবে বাংলাদেশ

বাড়তি পাঠ্যবই ছাপিয়েও আওয়ামী আমলে লুটপাট

মেহেদী হাসান রেজা, স্টাফ রিপোর্টার (ঢাকা)
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

এডিশন ডেস্কঃ 

স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পতিত আওয়ামী সরকারের সময়ে প্রতি শিক্ষাবর্ষের বই ছাপতে সরকারের বরাদ্দ থেকে নানা কৌশলে শত শত কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট মহল লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ আছে।

আর এই লুটপাটের অন্যতম কৌশল ছিল প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে বাড়তি চাহিদা দেখিয়ে বই ছাপার বরাদ্দ নেওয়া। বাস্তবে কম বা প্রয়োজনীয়সংখ্যক বই ছাপা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হলেও বিল করা হয় অনেক বেশি।
এমনই দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাড়ে তিন কোটি বইয়ের চাহিদা কমার মধ্য দিয়ে। আওয়ামী দুর্নীতির অভ্যাসগতভাবে এবারো বাড়তি চাহিদা দেখানোর চেষ্টা হলেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বর্তমান কর্তৃপক্ষের বিশেষ উদ্যোগে কিছুটা ব্যর্থ হয়েছে। তবে কয়েক দফা রিভাইজের পরও যে সংখ্যা চূড়ান্ত হয়েছে, বাস্তবে তা আরো অন্তত ২০ শতাংশ কম বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

জানা গেছে, এ বছর নিম্নমানের বই ছাপার অভিযোগে কালোতালিকাভুক্ত বিভিন্ন প্রেসের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে এনসিটিবি। এসব প্রেস মালিক বাতিলযোগ্য বই পুনরায় না ছেপেই ভিন্ন কৌশলে মোটা অঙ্কের বিল তুলে নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের চিহ্নিত ১৯টি প্রেসের বিল-ভাউচার (উপজেলা থেকে সরবরাহকৃত চালান) অধিকতর যাচাই-বাছাই করতে কাজ চালাচ্ছে এনসিটিবি গঠিত তদন্ত কমিটি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা কিংবা এনসিটিবির কালোতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এসব প্রেস।

অভিযুক্ত প্রেসের তালিকায় রয়েছে—অক্সফোর্ড প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন, শাফিন প্রেস, রেদওয়ানিয়া প্রেস, লেটার অ্যান্ড কালার, দি গুডলাক প্রিন্টার্স, অ্যারোস্টোক্র্যাটস প্রেস, অনুপম প্রেস, মিলন প্রেস, বর্ণমালা প্রেস, দোয়েল প্রেস, ন্যাশনাল প্রেস, টাঙ্গাইল অপসেট প্রেস, সরকার প্রেস, নাহার প্রেস, নাইমা প্রেস, ঢাকা প্রিন্টার্স, পাঞ্জেরি প্রিন্টার্স, আমাজন প্রেস, ভাই ভাই প্রেস প্রভৃতি।

এদিকে আওয়ামী আমলে পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির বহু অভিযোগ থাকলেও সেসব বিষয়ে কোনো তদন্তের উদ্যোগ নেয়নি বর্তমান কর্তৃপক্ষ। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে বেশ কিছুসংখ্যক প্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে এনসিটিবি প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করছে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকে সরকার। এই বই ছাপার দায়িত্ব পালন করে এনসিটিবি। এজন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর এই খাত ঘিরে গড়ে উঠেছে দুর্নীতির বিরাট সিন্ডিকেট। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি কর্মকর্তা, প্রেস মালিক, উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিস, পরিদর্শন-সংশ্লিষ্টরাসহ নানা পর্যায়ের লোকজন এই সিন্ডিকেটে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। প্রতিবছর ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তার বড় কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় সংশ্লিষ্টরা এখনো বেশ সক্রিয় রয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর গত বছর এনসিটিবিতে কিছু রদবদল করা হলেও ছাপার কাজে ফ্যাসিবাদের দোসররাই জড়িত থাকায় দুর্নীতি খুব বেশি কমেনি। আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এ বছর যে বই ছাপার কাজ চলছে, তা দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে বইয়ের মান নিশ্চিতে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এবারো কম-বেশি আওয়ামী সিন্ডিকেট বই ছাপার কাজ পাওয়ায় দুর্নীতিমুক্ত হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী জানান, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৪৩ হাজার ৯২০ কপি বিনামূল্যের বই ছাপা হয়েছিল। আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার ছাপা হচ্ছে ৩০ কোটি দুই লাখ ৫৫ হাজার ১৫৪ কপি বই। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই ছাপা হচ্ছে ১১ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার কপি। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের বইয়ের সংখ্যা ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৯ হাজার ১৫৪ কপি।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার দশমের প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বই ছাপা হচ্ছে না। এছাড়া প্রায় সাড়ে তিন কোটি বইয়ের চাহিদা কমেছে। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা সরকারের সাশ্রয় হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার জন্য সরকার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের বইয়ের জন্য ৪২৫ কোটি এবং মাধ্যমিকের জন্য এক হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।

এনসিটিবির সচিব অধ্যাপক সাহতাব উদ্দিন জানান, এ বছর যাতে বই ছাপার কাজে এনসিটিবি স্মরণীয় হয়ে থাকে, আমরা সে চেষ্টাই করছি। এবার বই ছাপায় সরকারের ২০০ কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বইয়ের বাড়তি চাহিদা কমাতে এবার আমরা বেশকিছু কাজ করেছি। আগে যেভাবে চাহিদা দেওয়া হতো, তা ঠিক ছিল না। এবারো প্রথমে যে চাহিদা দেওয়া হয়েছিল, আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তা কয়েক দফা রিভাইজ করতে বলি। এতে অনেক কমেছে। তারপরও অনেক বই বেশি ছাপা হচ্ছে। আরো দুবছর কাজ করলে অনেক কমবে।

একটি স্কুল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে গিয়ে দেখা গেছে শিক্ষার্থী সংখ্যা যেখানে ৯০, সেখানে বইয়ের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ১৬০ কপি। এসব চাহিদা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের তদারকির অভাব আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

একই ধরনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এনসিটিবির এক পরিদর্শক জানান, আমরা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখেছি, র‌্যানডম সিলেকশনে বইয়ের চাহিদা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায়। সে হিসেবে এবারো অন্তত ২০ শতাংশ বই বেশি ছাপানো হচ্ছে। কিছু স্কুল থেকে শিক্ষার্থীর চেয়ে অনেক বেশি চাহিদার কারণ হিসেবে বলা হয়Ñঅনেক শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করে, কারো বই নষ্ট হয়ে যায় ইত্যাদি। তবে স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী পাঁচ শতাংশ বেশি বইয়ের চাহিদা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।

এদিকে বাড়তি চাহিদা দেখিয়ে বই ছেপে দুর্নীতির নানা ফাঁকফোকর সম্পর্কে কয়েকজন প্রেস মালিক ও এনসিটিবি কর্মকর্তা জানান, বাড়তি চাহিদায় বই ছাপার খরচ দেয় সরকার। প্রেস মালিকরা কাগজে-কলমে চাহিদা অনুযায়ী বই ছাপানোর তথ্য দিলেও প্রকৃতপক্ষে ছাপা হয় অনেক কম। বিভিন্ন এলাকায় ডেলিভারির সময় পরিদর্শক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ডেলিভারি তথা বিল-ভাউচারে উল্লিখিত সংখ্যার চেয়ে ডেলিভারির সংখ্যা থাকে কম। এভাবে সংশ্লিষ্টরা দুর্নীতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে থাকেন। এছাড়া কাগজের মান কম, সাইজ ছোট, টেন্ডার কারসাজিসহ নানাভাবে দুর্নীতি করে থাকেন প্রেস মালিক ও সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে বই ডেলিভারি-পূর্ব এবং পরে পরিদর্শনের জন্য যে কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের মাধ্যমেও দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ আছে। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিদর্শন কোম্পানির জন্য এনসিটিবি কোটি টাকা বাজেট রাখলেও টেন্ডারে তারা অনেক কম টাকায় কাজ নেয়।

এবার পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও মান নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়ে এনসিটিবির সচিব অধ্যাপক সাহতাব উদ্দিন জানান, এবার কম বই ছেপে বেশি বিল করার সুযোগ নেই। আমরা প্রেসে বই ছাপার কাজ সিসিটিভি ক্যামেরায় মনিটরিং করছি। কাজের লাইভ টাইম ডেটা পাওয়া যাচ্ছে। এবার বই ডেলিভারির সময় গুনে গুনে নেওয়া হচ্ছে। সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে। এবার বইয়ে ভালো মানের অফ হোয়াইট কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কোন প্রেসে কোন বই ছাপা হচ্ছে, মান নিয়ে তাদের ধরার জন্য বইয়ের প্রতি ফর্মায় প্রেসের নাম লেখা থাকছে। এনসিটিবিতে এবার দুটি ল্যাব বসানো হয়েছে, সেখানে কাগজের মান পরীক্ষা করা হচ্ছে।

সূত্রমতে, এরই মধ্যে প্রাথমিকের ৩২ শতাংশ নতুন বই বিভিন্ন এলাকায় ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে। আরো ৫৭ শতাংশ বই ছাপা শেষ হয়েছে। বাকি বই দ্রুতই কাজ শেষে স্কুলে স্কুলে পৌঁছে যাবে। তবে হবিগঞ্জ এলাকায় পাঠানো কিছু বইয়ের মানে ত্রুটি ধরা পড়ায় সেগুলো ফেরত এসেছে। এজন্য অগ্রণী প্রেসকে শোকজ ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরীর মন্তব্য জানার চেষ্টা করলেও মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার কারণ দেখিয়ে তিনি সাক্ষাতে কথা বলতে রাজি হননি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত খুলনা এডিশন-২০২৫
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট