খুলনা এডিশন::
বাগেরহাট রামপালে দীর্ঘদিনের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে জোরপূর্বক সম্পত্তি দখলের চেষ্টা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইয়াছিন সরদার(৭০) থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রামপালের উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই (পবনতলা)গ্রামের বাসিন্দা ইয়াছিন সরদার-এর সঙ্গে মাঞ্জুর সরদার (৪০), মান্নান শেখ (৫৫), কালাম শেখ (৫০), আরিফ শেখ (৩০), আকব্বর শেখ (২৮), সকিনা বেগম (৪০)ও মিম খাতুন (২০)সহ কয়েক জনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসতবাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ চলছে।
ভুক্তভুগী ইয়াসিন সরদার উল্লেখ করেন-বিবাদীগণ আমাদের জমিতে থাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কাটিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সৃষ্টি করিয়া জোরপূর্বক দখল চেষ্টার কারণে আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি।উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে গত ০৯-১২-২০২৫ তারিখে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শালী বৈঠকের বিবাদীগণ আমাদের জমিতে যাইতে পারিবেনা মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
ইয়াসিন সরদার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, উক্ত সিদ্ধান্ত অমান্য করিয়া অদ্য ইং ১০-১২-২০২৫ তারিখে আনুমানিক সকাল ০৭ঃ০০ ঘটিকায় ১নং বিবাদীর হুকুমে ২নং ও ৭নং বিবাদীগন পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রস্বস্ত্রে সজ্জিত হইয়া অত্র উপজেলাধীন কুমলাই(পবনতলা)সাকিনস্থ আমাদের বসতবাড়ির জমিতে আসিয়া আমাকে ও আমার পরিবারের লোকদের কাউকে কোন কিছু না জানাইয়া আমাদের বসত ঘরের সামনে বেড়া নির্মান করিয়া জমি দখলের চেষ্টা করে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের ও অভিযোগে বলেন, এ সময় আমি ও আমার স্ত্রী পাপিয়া বেগম পান্না(৬০) তাহাদের বাধা প্রদান করিলে তাহারা আমাদের উদ্দেশ্য করিয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করিতে থাকে। গালিগালাজের একপর্যায়ে ২নং বিবাদী ৩নং, ৪নং, ৫নং, ৬নং ও ৭নং বিবাদীনকে আমাদের মারপিট করিতে হুকুম প্রদান করিয়া আমাদের মারপিট করিবার জন্য ধাওয়া দিলে আমি ও আমার স্ত্রী আমার বসত ঘরে গিয়া আশ্রয় নেই। উক্ত বিবাদীরা ও আমাদের পিছন পিছন আসিয়া আমাদের বসতঘরে প্রবেশ করিয়া ২নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়া আমার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্য মাথায় আঘাত করিলে আমার স্ত্রী মাথা সরিয়ে নেওয়া চেষ্টা করিলে উক্ত আঘাত তাহার মুখে লাগিয়া উপরের পাটির ডান পাশের একটি দাঁত পড়িয়া যায় এবং উপরের পাটির সামনের একটি দাঁত পড়িয়া যাওয়ার উপক্রম হয়। ইহাতে সে গুরুতর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়।৪নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার সাবল দিয়া আমার স্ত্রীর হাঁটুর নিচে পিছনে আঘাত করে। ইহাতে রক্তাক্ত ও নীলা ফুলা জখম প্রাপ্ত হয়। ৩নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমার বাম পায়ের হাঁটুতে আঘাত করিয়া নিলা ফুলা জখম করে।৫নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমার ও আমার স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করিয়া ফুলা জখম করে এবং ৬নং ও ৭নং বিবাদীগন আমাদের এলোপাতাড়িভাবে কিলও ঘুষি মারিয়া আহত করে। উক্ত বিবাদীগনের মারপিটের সময় আমাদের ডাকচিৎকার শুনিয়া স্থানীয় লোকজন ছুটিয়া আসিতে দেখিয়া তাহারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করিতে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদান করিয়া বলে এ ঘটনা লইয়া কোন প্রকার মামলা মোকাদ্দমা করিলে তোদের কে জীবনে শেষ করিয়া ফেলিবো।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় আমি ও আমার স্ত্রী চিকিৎসার জন্য রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখিয়া উক্ত হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে রাখেন। বর্তমানে আমরা উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছি।
অভিযুক্ত ১নং বিবাদী মাঞ্জুর সরদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি দখল বা কাউকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
এ বিষয়ে রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত চলমান।তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।