ঢাকা অফিস:.
বিনোদন কর্মী না সাংস্কৃতিক মুজাহিদ বিষয়টি নিয়ে আদর্শিক কর্মীদের বড় একটি অংশ দ্বন্দ্বে রয়েছেন। কেউ কেউ নিজেকে বোল্ডলি বিনোদন কর্মী হিসেবে ঘোষণা করছেন। দালিলিক জ্ঞান না থাকা কিংবা জীবন নিয়ে হতাশাগ্রস্ত কর্মীরা এ দলে বেশি।
সংস্কৃতিক কর্মীদের বিনোদন কর্মী হওয়াটা অত্যন্ত লজ্জাজনক, দুখ জনক, হতাশা জনক একই সাথে ঘৃণার বিষয়। বিনোদন কর্মী তারা যারা মানুষকে বিনোদন দিবেন এবং তার বিনিময়ে কিছু অর্থ লাভ করবেন। তার কন্টেন্ট অশ্লীল, রগরগে বা ফালতু বিষয় হলেও কিচ্ছু যায় আসে না। আবার তিনি যা বলছেন তা হৃদয়ে লালন করবেনই এমন নাও হতে পারে।
হতে পারে স্লিভলেস ড্রেসে দেহের প্রিমিয়ার শো করে “নিশ্বাসের কোন বিশ্বাস নাই” গাইছেন কিংবা “আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে, যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ” গাই্ছেন অথচ তার মিউজিক ডিরেকশান, কোরিওগ্রাফি কোনটাই লেখকের ভাবনার সাথে যায় না। অর্থাৎ তারা যা বলছেন তা বুঝতে পারছেন না, অথবা তা তাদের কানের পর্দা কেটে হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছে না।
মোদ্দা কথা, রাসুল সাঃ যাদের বিষয়ে বলেছেন, এদের পেটে এগুলির চেয়ে আগুন রাখা উত্তম।
এরা অশ্লীলতার প্রসারে কাজ করেন। ইসলামের বিধান এর বিপরীত এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেন। হতে পারে এরা কেবল টাকার জন্যে কাজ করেন। দুখঃজনক হলেও সত্য কেবল টাকার জন্যে কাজ করেন এমন কিছু অর্থ পিশাচ আমাদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে।
টাকা নিলেই অর্থ পিশাচ হয় এ কথা আমি বলছি না। লেখক তার মেধা সত্যের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করবেন। কণ্ঠ শিল্পী তার গায়কী শিল্প এবং সময়ের বিনিময় অর্থ গ্রহণ করবেন। পিশাচ হওয়াটা ভিন্ন বিষয়। সে নিয়ে না হয় অন্য কোন পর্বে কথা বলব। ইনশা আল্লাহ!
নাবী মুরসালিন সাঃ এর সাংস্কৃতিক মুজাহিদগণ এগুলির ঊর্ধে ছিলেন। তারা সাংস্কৃতিক মুজাহিদ ছিলেন। রাসুল সাঃ তাদেরকে যেদিন ডেকে ছিলেন তিনি সেদিন যে বাক্যটি ব্যবহার করেছিলেন তা এর প্রমাণ বহন করে। তিনি বলেছিলেন, তোমরা যারা তরবারি দিয়ে সহযোগিতা করছ তাদেরকে নিজ জিহবা দিয়ে সহযোগিতা করতে কে নিষেধ করেছে(অপসাস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লিখতে, বলতে কে নিষেধ করেছে?)
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে তিনি সা: বিনোদন হিসেবে ট্রিট করেননি। জিহাদের প্যারালাল হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। হাসসান বিন সাবিত রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে সাংস্কৃতিক যুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণেই গনিমতে অংশ দিয়েছেন। তিনি সেদিন তরবারির যুদ্ধে অংশ নেননি। আমি নিজেকে “বিনোদন কর্মী” নয় “সাংস্কৃতিক মুজাহিদ” পরিচয় দিতে পছন্দ করি, সম্মানিত বোধ করি।
বিনোদন কর্মী আর সাংস্কৃতিক মুজাহিদের মধ্যে পার্থক্যটা খুব স্পষ্ট।আপনি বিবর্তন প্রক্রিয়ায় বানর থেকে তৈরি হয়েছেন বলে বিশ্বাস করতে পারেন অথবা আদম আ. থেকে সম্মানিত মানব ধারায় তৈরি হয়েছেন বলেও বিশ্বাস করতে পারেন।
একটি অত্যন্ত অপমানজনক আর অন্যটি অত্যন্ত সম্মান জনক। একটি মিথ্যার সর্বোচ্চ স্তর অন্যটি আসমানী সত্য।
সম্মানের রাস্তা রেখে অসম্মানের পথে হেটে যাওয়াটা বোকামি বৈ আর কি হতে পারে?