ঢাকা অফিস:
পাবনার সুজানগর উপজেলার একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ভারত ও আওয়ামী লীগ বিরোধী ফানি ভিডিও পোস্ট করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় রোববার (২৯ জুন) বিকেলে সুজানগর থানায় লিখিত এজাহার দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিক দুলাই ইউনিয়নের চর জোরপুকুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নাম সাইমুম সাজিদ। তিনি ওই ইউনিয়নের চর জোর পুকুরিয়া গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে। তিনি ২০২১ সালে এনটিভি রিয়েলিটি শো অনন্য প্রতিভার মাধ্যমে তার মিডিয়া যাত্রা শুরু করেন। এরপর থেকে তিনি তার ফেসবুক পেজে বিনোদনমূলক ভিডিও দিয়ে থাকেন। এর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন নাটকেও অভিনয় করেছেন।
অভিযুক্তরা দুলাই ইউনিয়নের চর জোর পুকুরিয়া গ্রামের মৃত বাদল প্রামাণিকের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩২), মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে কামাল হোসেন (৪২), মৃত রব্বান প্রামাণিকের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫), মৃত এজেম উদ্দিনের ছেলে জামাল উদ্দিন (৪৫), রবিউল ইসলাম (২০) ও মৃত বক্কার প্রামাণিকের ছেলে মুক্তার হোসেন (৪৫)। সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাইমুম সাজিদ নামের কনটেন্ট ক্রিয়েটরের (Saimum Shajid) পেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র অন্দোলনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভিডিও পেজে পোস্ট করা হয়। এরপর ভারত বিরোধী ফানি ভিডিও পোস্ট করেন নিয়মিত। এছাড়াও তার বাবা পতিত আ.লীগের আমলের নির্যাতিত বিএনপির একজন সক্রীয়কর্মী। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল (২৮ জুন) সন্ধ্যার দিকে আ.লীগের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র চাকু, চাইনিজ কুড়াল, লোহার পাইপ এবং বাঁশের লাঠি নিয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুম সাজিদসহ পরিবারের ওপর অতর্কিত হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় বাড়ির আলমারিতে থাকা ২ লক্ষাধিক টাকা ও সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করে নিয় যায় হামলাকারীরা।
এসময় তিনি ফেসবুক লাইভে ও জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের কল দিয়ে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুম সাজদ অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফানি ভিডিও পোস্ট করায় তখন থেকেই আওয়ামী লীগের লোকজন সুযোগ নিয়েছিল আমাকে মারধর করতে। এ ছাড়াও ভারতের রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফানি ভিডিও পোস্ট করায় তারা আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত ছিল। আমার বাবা বিএনপি করাতে ২০১৮ সালে বড় ভাই খাইরুলের এসআইয়ের হওয়া চাকরি গ্রামের আওয়ামী লীগের লোকজন হতে দেয়নি। আমার পরিবারের ওপর আগে থেকেই আওয়ামী লীগের লোকজন নির্যাতন করে আসছে। এখনও যদি নির্যাতনের শিকার হই তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে?।
তিনি আরও বলেন, আমি কনটেন্ট ক্রিয়েটর করে আওয়ামী লীগের লোকজন ও ভারত বিরোধী পোস্ট দিয়ে টাকা ইনকাম করতেছি ও একটি বাড়ি নির্মাণ করতেছি এটি এদের সহ্য হচ্ছে না। এজন্যই এই হামলা করেছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুম সাজিদ বাদী হয়ে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তদন্ত করা হচ্ছে। আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।