1. khulnaedition@gmail.com : Khulna Edition : Khulna Edition
  2. md.ahsanulrobiul@gmail.com : Ahsanul Islam : Ahsanul Islam
  3. hasanur321@gmail.com : হাসানুর রহমান : হাসানুর রহমান
  4. habibullahbhola467@gmail.com : মোঃ হাবিবুল্লাহ : মোঃ হাবিবুল্লাহ
  5. imranbinrabiul@gmail.com : Md Imran Nazir : Md Imran Nazir
  6. mizan070301@gmail.com : মোঃ মিজানুর রহমান : মোঃ মিজানুর রহমান
  7. mahedihasananas@gmail.com : Mahedi Hasan Anas : Mahedi Hasan Anas
  8. zakirnet@yahoo.com : SM ZAKIR Hossain : SM ZAKIR Hossain
  9. admin@www.khulnaedition.com : খুলনা এডিশন :
  10. zaberhosen1143@gmail.com : মোঃ জাবের হোসেন : মোঃ জাবের হোসেন
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন
আজকের সর্বশেষ এডিশন:

টাকা না মানুষ বেশি প্রয়োজন : ইবনে শাহ

শাহ আজিজুর রহমান তরুণ
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে
Jpg 3
ইবনে শাহ

ঢাকা অফিস :

অনেকেই বলে থাকেন “পৃথিবী টাকার পিছনে ঘুরছে”। টাকা ছাড়া পৃথিবীতে কোন কিছুই করা সম্ভব হয় না। কেউ কেউ আবার বলেন “এ পৃথিবী টাকার গোলাম” কিন্তু একটা বিষয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তা করে দেখি না –টাকা হলো পণ্য ও সেবার লিখিত ভার্সন। পণ্য ও সেবা প্রদান করার মত লোকবল না থাকলে টাকার কোন দাম নেই, টাকা তখন মূল্যহীন। কারণ টাকা খেয়ে জীবন বাঁচানো যায় না, টাকার পিঠে চড়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া যায় না, জীবন বাঁচাতে খাদ্যের প্রয়োজন যাতায়াতের জন্য যানবাহন, আর এ দুটো বস্তু মানুষ ছাড়া উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।

বিগত শতাব্দীর ৫০ এর দশকে আমেরিকায় প্রত্যেক পরিবারে ৫-৭টা করে সন্তান থাকতো। ইংল্যান্ডে এই সংখ্যা ছিল গড়ে ৩ জন। জাপানে প্রত্যেক দম্পতির গড়ে ৪.৫ জন সন্তান ছিল। উপনিবেশ আমলে পূর্ববাংলায়সহ পৃথিবীর সকল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের প্রত্যেক মুসলিম পরিবারের গড়ে ৭–৮ টা করে সন্তান ছিল। ঠিক সে সময় বিশ্ব মোড়ল ইউরোপ আমেরিকা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করল। বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বিপদজনক মনে করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার করে মুসলিম দেশ সমূহে পরিবার পরিকল্পনার নামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করতে লাগলো।

অন্যদিকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে পৃথিবীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলো। পৃথিবীর সম্পদ নির্দিষ্ট। ট্যাঞ্জিবল/দৃশ্যমান বা স্থাবর সম্পদ বাড়ে না। তাই ধনীদেরকে আরও ধনী হতে হলে অনিবার্যভাবে গরীবদের সম্পত্তি কেড়ে নিতে হবে। এভাবেই ধনী দেশগুলো গরিব দেশ সমূহের সম্পদ শোষণ করা শুরু করে দেয়।

অর্থনীতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলুষিত দিন ছিল ১৯৭১ সালের ১৫ই আগস্ট। ঐদিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন এক ঘোষণায় ডলারকে স্বর্ণের মান থেকে বিচ্ছিন্ন করে, আর ডলারকে সকল দেশের মুদ্রার সাথে বেঁধে দেয়। সেদিন আমাদের সব টাকা-কড়ি, সোনা-গয়না কাগজ হয়ে গেলো। সেদিন পৃথিবীর সব মানুষের সব সম্পত্তির একচেটিয়া মালিক হয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্র। , ফলে ফিয়াট মুদ্রাব্যবস্থার সূচনা হয়, যেখানে টাকা কাগজের হলেও তার পেছনে কোনো স্বর্ণ রিজার্ভের প্রয়োজনীয়তা নেই। এই নীতির ফলে যে কোন দেশে স্বর্ণের রিজার্ভ থাক বা না থাক, ইচ্ছামত কাগজের মুদ্রা ছাপিয়ে যেকোনো সংকট মোকাবেলার চেষ্টা করে। আর এভাবেই অর্থনৈতিক মূল বিপত্তি শুরু হয়ে যায়।

ধনিরা গরীবদের সম্পদ কেড়ে নিতে নিতে একসময় সব শেষ হয়ে যায়। গরীবদের আর কিছু দেবার বাকি থাকে না। যেমন ধরুন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাছে তাদের একটা থাকার ঘর, খাবার ভাত আর নিজের দেহ বাদে কিছু নেই। কৃষকের লাঙল জোয়াল বাদে কিছু নেই। অর্থাৎ, পুঁজিপতিদের সেবা করার জন্য যতটুকু সহায় সম্বল, যন্ত্রপাতি দরকার ঠিক ততটুকুর মালিক হতে পারবেন। বাকিটা পুঁজিপতিরা কেড়ে নিবে।

গরিবদের সম্পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য তারা অনেক ফন্দিফিকির তৈরি করেছে। যেমন ধরুন কৃষি খাতে, আজ থেকে ৫০ বছর আগে বিঘা প্রতি ছয় সাত মন ধান হতো, বছরে একবার খুব জোর দুবার ফসল হতো।
এখন প্রতিবছর দুই থেকে তিনবার ফসল হয় আর বিঘাপ্রতি উৎপাদন হয় ৩০ মন। কৃষকের গরুতে যেখানে আগে গোস্ত পাওয়া যেত ১’৫ থেকে ২ মন এখন সেই গরুর থেকে পাওয়া যায় ৩ মন থেকে ৬-৭ মন গোস্ত। শাকসবজি আলু পটল লাউ কুমড়া পুকুরের মাছ সবখানেই ৪ থেকে ৮/১০ গুণ বেশি ফলন হচ্ছে। আজ থেকে ৫০ বছর আগে প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে ৮-১০ টি সন্তান থাকতো। এখন কৃষকের ঘরে সর্বোচ্চ ৩-৪ টি সন্তান খুঁজে পাওয়া যায়। কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু খাবার লোক অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। এ হিসেবে তো আমাদের প্রতিটি কৃষক কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার কথা কিন্তু বাস্তবে কি তাই হয়েছে।

না হয়নি, কারণ পুঁজিপতিরা কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধির নাম করে বিভিন্ন ব্যবসার ফাঁদ পেতেছে। কৃষি যন্ত্রপাতি, কীটনাশক, হরমোন, সার, উন্নত বীজ, গৃহপালিত পশুর খাদ্য, মাছের খাদ্য এসব কিনতে কিনতে কৃষকের লাভের অংশ পুরোটাই চলে যায় পুঁজিপতিদের একাউন্টে। মাঝখান থেকে কৃষকের হাসি আনন্দ, অবসর সময় কাটানো, জারি -সারি, ভাটিয়ালি, পালা গান ও মেলায় যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সিন্ডিকেটের কারণে এক মৌসুমে ফসলের ভালো মূল্য পেয়ে কিছু লাভ করলেও পরের বছর লোকসান গুনতে গুনতে অস্থিমজ্জা সমান হয়ে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য এখন সারা দিন রাত পরিশ্রম করতে হয়। জীবন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে সংগ্রাম ও ক্লান্তিতে ভরে গেছে ।

সৃষ্টিকর্তার বিধান ভুলে মানুষ যখন তার খেয়াল খুশি মত পৃথিবীবাসীকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে তখন স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্টিকর্তা এর প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। সৃষ্টিকর্তা আক্ষেপ করছেন –“তোমরা আমার নিয়মে সুখ না খুঁজে নিজেরাই জুলুমতন্ত্র তৈরি করেছ ,’সুখ তো দূরে থাক, অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য যেহেতু এতো সংগ্রাম, তোমাদের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে “।

সৃষ্টিকর্তার খেলা দেখুন, আজ ২০২৫ সালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কত শিশু জন্ম নিচ্ছে, বৈষম্য সৃষ্টিকারী লুটেরাদের জন্মহার লক্ষ্য করলে সত্যিই সত্যিই বুঝা যায়– আল্লাহু আজিজুন জুন্তিকাম” আল্লাহতালা সবচেয়ে বড় প্রতিশোধ গ্রহণকারী। বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কিছু দেশের বর্তমান সময়ের জন্মহার–

*যুক্তরাষ্ট্র ১.৬
*কানাডা ১.৩
*মেক্সিকো ১.৬
*আর্জেন্টিনা ১.৫
*ব্রাজিল ১.৬
*চিলি ১.২
*কলম্বিয়া ১.৪
*পেরু ২.০
*উরুগুয়ে ১.৮
*ভেনেজুয়েলা ২.১
*কিউবা ১.৩
*পুয়ের্তো রিকো ০.৯

* পোল্যান্ডে ১.৩
*বুলগেরিয়া ১.৮১
*ফ্রান্স ১.৬৬
*হাঙ্গেরি ১.৫৫
*আয়ারল্যান্ড ১.৫৩
*যুক্তরাজ্য ১.৪৪
*জার্মানি ১.৩৮
*ইতালি ১.২৪
*স্পেন ১.১২
*মাল্টা ১.০৬
*আর্মেনিয়া ১.৭
*আলবেনিয়া ১.৫২
*কসোভো ১.৬১
*আজারবাইজান ১.৬০

*আফগানিস্তান ৪.৮
*পাকিস্তান ৩.৬
*বাংলাদেশ ২.২
*ইরান ১.৭
*মালদ্বীপ ১.৭
*ব্রুনেই ১.৮
*ইন্দোনেশিয়া ২.২
*মালয়েশিয়া ১.৮

*নেপাল ২.১
*ভারত ২.০
*শ্রীলঙ্কা ২.০
*মিয়ানমার ২.০
*ফিলিপাইন ১.৯
*সিঙ্গাপুর ১.০
*থাইল্যান্ড ১.০
*ভিয়েতনাম ২.০
*চীন ১.০
*হংকং ০.৮
*ম্যাকাও ০.৬
*জাপান ১.২
*উত্তর কোরিয়া ১.৮
*দক্ষিণ কোরিয়া ০.৭
*তাইওয়ান ০.৯

* রাশিয়া ১,৪১
*কাজাখস্তান ২.৯
*কিরগিজস্তান ২.৮
*তাজিকিস্তান ৩.৬
*তুর্কমেনিস্তান ২.৭
*উজবেকিস্তান ৩.৪
“বাহরাইন ২.০
“ইরাক ৩.৭
*জর্ডান ২.৬
*কুয়েত ১.৫
*লেবানন ২.২
*ওমান ২.৫
*ফিলিস্তিন ৩.৬
*ইসরায়েল ২.৮
“কাতার ১.৪
“সৌদি আরব ২.১
*সিরিয়া ২.৭
*তুরস্ক ১.৬
*ইয়েমেন ৪.৬

* নাইজার ৬.৬৪
*চাদ ৫.৯৪
*সোমালিয়া ৫.৯১
*মালি ৫.৪২
*সুদান ৪.৪৭
*গিনি ৪.৭৮
*মোজাম্বিক ৪.৬৬
*কেনিয়া ৩.০
*ইথিওপিয়া ৪.১
*দক্ষিণ আফ্রিকা ২.৩১
*মরক্কো ২.৪
*মিশর ২.৩
*লিবিয়া ২’২৫
অস্ট্রেলিয়া ১.৭৭
নিউজিল্যান্ড ১.৫৮
পাপুয়া নিউ গিনি ৩.৩
ফিজি ২.২ (উৎস: World Population Review, Macrotrends)

কোন দেশের জনসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখতে হলে দম্পতি প্রতি ২ জন শিশু জন্ম নিতে হয়। পৃথিবীতে মানুষ কম জন্ম নিচ্ছে। আর জনমিতি শাস্ত্র থেকে আমরা জানি যে, একবার এই সূচক নিচে নামতে শুরু করলে এই জন্মহার বাড়ার কোন সম্ভাবনা, কোন উপায় নেই। উপরের তথ্য অনুযায়ী উন্নত ও শক্তিধর দেশগুলোর জন্মহার লক্ষ্য করলে বুঝা যায় ৭৫ বছর পর জনসংখ্যা আজকের অর্ধেক হয়ে যাবে। মনে হতে পারে জনসংখ্যা কমে যাওয়া তো ভালো জিনিস। এটাকে কেউ খারাপ বললে তাকে পুরান ঢাকার চক বাজারে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া দরকার। মনে হবে দূষণ, অশান্তি, অশিক্ষা কমাতে জনসংখ্যা কমার বিকল্প নেই।
কিন্তু জনসংখ্যা একটা নির্দিষ্ট হারে কমতে হয়। এই হারের চেয়ে দ্রুত জনসংখ্যা কমলে ঐ দেশটাতে কেয়ামত নেমে আসে৷ দেশটা ধ্বংস হয়ে যায়। গাছ গাছে ফুল ও ফল থাকবে কিন্তু ফল পেড়ে দেওয়ার লোক থাকবে না। যুদ্ধাস্ত্র থাকবে, কিন্তু চালানোর সৈনিক থাকবে না। অন্যদিকে হত দরিদ্র অনুন্নত ও উন্নয়নশীল মুসলিম দেশগুলোর জনসংখ্যা বিদ্ধির হার যে অবস্থায় আছে সে অনুযায়ী ৭৫ বছর পর বেড়ে দেড় গুণ থেকে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মুসলিম দেশগুলোর এই বর্ধিত জনসংখ্যা জনশূন্য হওয়া ঐ সকল দেশে ছড়িয়ে পড়বে এবং সেখানে তারাই নেতৃত্ব দিবে।

এ বিষয়টা চতুর ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে, তাইতো তারা ফিলিস্তিনে মুসলিমদের উপর ব্যাপক গণহত্যা চালাচ্ছে। বেছে বেছে মুসলিম শিশুদেরকে হত্যা করছে। ইসরাইলের মোড়ল আমেরিকা মুসলিম দেশসমূহে যুদ্ধ বাঁধিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে । ইসরাইলের দোসর ভারত নিজ দেশের মুসলিম জনসাধারণের উপর ব্যাপক গণহত্যার চালাচ্ছে। লক্ষ্য একটাই ক্রমবর্ধমান মুসলিমদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা।

মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্যকে এই বিষয়টি খুব ভালোভাবে অনুধাবন করতে হবে। ইসলামী মূল্যবোধ ও বিধানসমূহ যথাযথ পালনের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে। পৃথিবীব্যাপী দ্বীন ইসলামের অনুসারী বৃদ্ধি পাওয়া এবং জনমিতির পরিসংখ্যান বলছে আগামী শতাব্দীর বিশ্ব হবে ইসলামিক বিশ্ব। এটা এমনই সত্য যে রাতের পর যেমন দিন আসে ঠিক তেমনি। মুসলিম জাতির এই অমানিশা কেটে যাবে বিজয়ের সূর্য উঠবেই। এর প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে।

লেখক: ইবনে শাহ
বিশিষ্ট কলাম লেখক ও রাজনীতিবিদ। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত খুলনা এডিশন-২০২৫
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট