ভোলা সদর :
শিক্ষক সংকটের কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। শিক্ষকের ২০ পদের মধ্যে ১৭টিই শূন্য রয়েছে। এ কারণে অতিথি শিক্ষক দিয়ে কোনো রকমে
শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে। জোড়াতালির এ পাঠদান ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে সরকারের কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনবল গঠনের উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে।
বস্ত্র খাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০২২ সালে ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং ও ওয়েট প্রসেসিং দুটি বিষয়ে ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৯০ জন। গত তিন বছরে শিক্ষার্থী তিন গুণ বাড়লেও শিক্ষক কমেছে।
ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষকসহ এ প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩৪টি। বর্তমানে কর্মরত আছেন ১০ জন ও শূন্য আছে ২৪টি পদ। অনুমোদিত ২০ জন শিক্ষকের মধ্যে বর্তমানে অধ্যক্ষসহ কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন।
শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ১১টি ল্যাব, আধুনিক লাইব্রেরি, মাল্টিপারপাস হলরুমসহ সব
সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু ১১টি ল্যাবরেটরি পরিচালনার জন্য আছেন মাত্র দুজন সহকারী। শিক্ষকের পাশাপাশি জনবলের অভাবে ল্যাবগুলো অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। ফলে সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ব্যবহারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত পাঠদানে ব্যর্থ হচ্ছেন কর্মরত শিক্ষকরা।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মশিউর জানান, শিক্ষকের অভাবে ল্যাব সহকারী দিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। অতিথি শিক্ষক দিয়েও মাঝেমধ্যে থিওরি ক্লাস করা হয়। প্রতিটি বিষয়ে ল্যাব আছে; কিন্তু হাতে-কলমে কিছুই শিখতে পারি না। ঘাটতি রেখেই পাঠদান শেষ করতে হচ্ছে।
পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভবন, পরিবেশ ল্যাব, সরঞ্জাম সবই আছে; কিন্তু শিক্ষক নেই। গত চার বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগের দাবি করে আসছেন। কিন্তু সমাধান হয়নি। তাদের অভিযোগ, শিক্ষকের অভাবে অনেক কিছুই শিখতে পারেননি তারা। নতুন শিক্ষার্থীদের যেন এ সমস্যায় পড়তে না হয়, সেই দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষক সংকটের কারণে ব্যবহারিক ক্লাসগুলো যথাযথভাবে হচ্ছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দক্ষ শিক্ষকের অভাবে ল্যাবের যন্ত্রপাতিগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর জাহাঙ্গীর আলম জানান, একাই শ্রেণি ব্যবস্থাপনা করতে হয়। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজও করতে হয়। এতে চাপে পড়তে হয়। এর পরও ম্যানেজ করে নিতে হয়। শিক্ষক সংকটের কারণে স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অধ্যক্ষ শাফিউল আলম জানান, কর্মরত যারা আছেন, সবাই মিলে ক্লাসগুলো পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া বাইরে থেকে অতিথি শিক্ষক আনা হচ্ছে। জনবল না থাকায় ব্যবহারিক ক্লাস নিতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয়। এভাবে পাঠদান চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। জনবল চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পেলেই এ সমস্যা সমাধান হবে।