এডিশন ডেস্ক::
অধিকার, কর্মসংস্থান, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র এবং একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য বৈষম্য, স্বৈরাচার, গণহত্যা, ধ্বংস ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, আসুন গণমানুষের শক্তি, গণতন্ত্র ও সবার জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের জন্য আমরা অবস্থান গ্রহণ করি। প্রতিবাদ গড়ে তুলি কর্পোরেট ও কোটিপতিদের লোভ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাবহার, পিতৃতন্ত্র, বর্ণবাদ এবং পরিকল্পিত অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) খুলনার পাইকগাছার হরিঢালী-কপিলমুনি মহিলা কলেজ চত্বরে সাইকেল র্যালী পূর্ব মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য কপ-৩০ ও যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাকে সামনে রেখে সাইকেল র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন।
সচেতন সংস্থার সভাপতি বিদ্যুৎ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন অধ্যাপক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য, অবসারপ্রাপ্ত শিক্ষক সমীরণ দে, প্রভাষক সাইফুল ইসলাম, ডা. বাসুদেব রায়, অনির্বাণ লাইব্রেরির সহ-সভাপতি মানিক ভদ্র, পরিবেশ কর্মী আফজাল হোসেন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের রিয়াদ হোসেন প্রমূখ।
মানববন্ধনে খুলনা জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদ ও শিবসা নদী দ্রুত খনন এবং উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান বক্তারা। তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ওই অঞ্চলের মানুষের সীমাহীন সংকটের মুখোমুখী। এই সংকট মোকবেলায় মৃতপ্রায় নদীগুলো দ্রুত খনন করতে হবে। একইসঙ্গে উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। খুলনা-পাইকগাছা মহাসড়ক দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় ৬দফা দাবি তুলে ধরে বলা হয়, প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, নারী, কৃষক, জেলে, পশুপালক, যুবক, শিশু, আদিবাসী, অভিবাসী, শরণার্থী, নানা বর্ণের মানুষ, এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের উপর কেন্দ্রিভূত একটি ন্যায্য রূপান্তরের মাধ্যমে চলমান ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। দ্রুত, ন্যায্য এবং নারীবান্ধব, দূষণ বন্ধ করতে হবে; মানুষ এবং পৃথিবীর জন্য একটি কার্যকর নবায়নযোগ্য ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে; উচ্চ-কার্বন, কৃষি-শিল্প, কৃষি থেকে কৃষিভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র এবং টেকসই খাদ্য ব্যবস্থায় রূপান্তর করুন, যা গৃহস্থালি ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন এবং প্রাপ্তির অধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়। সকল প্রকার যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ করতে হবে; পৃথিবীব্যাপী সামরিকীকরণ বন্ধ করতে হবে; ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আরো বলা হয়, বহুজাতিক কর্পোরেশন ও বিলিয়নিয়ারদের উপর বাড়তি কর আরোপ করতে হবে; ঋণ বাতিল করতে হবে; জলবায়ু অর্থায়ন করতে হবে; যুদ্ধ, জীবাশ্ম জ্বালানি ও ক্ষতিকারক প্রকল্প থেকে বিরত থাকতে হবে; মানসম্পন্ন জনসেবা বৃদ্ধি করতে হবে; টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য অর্থায়ন করতে হবে। টেকসই জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত অধিকার ও ভূখণ্ডের প্রতি সম্মান ও সুরক্ষা দিতে হবে; প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধার করতে হবে; অতিরিক্ত সম্পদ আহরণ বন্ধ করতে হবে। অর্থনীতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা গণতান্ত্রিক করতে হবে; বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর ব্যবস্থা ন্যায়সঙ্গত করতে হবে; সম্পদ ও ক্ষমতা পুনর্বণ্টন করতে হবে; জনগণ ও জাতির মধ্যে সংহতি গড়ে তুলতে হবে।