এডিশন ডেস্কঃ
পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ ৫ দফা দাবিতে ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ ৩০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। এ সময় দলের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক এবিএম জাকারিয়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মুফতি মোস্তফা কামাল এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, দেশের এতগুলো রাজনৈতিক সংগঠন ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কেমন যেন স্বৈরতান্ত্রিক সরকারগুলোর মতো এই সরকারও জনতার দাবির প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করছে। এই সরকার একমাত্র জনতার রক্তমাখা-জীবন উৎসর্গ করা অভিপ্রায়ে গঠিত। ফলে জনতার দাবির প্রতি ক্রমাগত উপেক্ষা এই সরকারের নৈতিক ও আইনগত বৈধতাকে নষ্ট করবে।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে মহাসচিব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন ইস্যুতে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া স্বৈরতন্ত্রের স্থায়ী বিলোপ পূরণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়নি। জুলাই সনদে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর আইনি ভিত্তি নিয়ে টানাপোড়েন এখনও শেষ হয়নি।
ফ্যাসিবাদে জড়িতদের বিচারে ধীরগতি ও স্বল্পমাত্রা হতাশা তৈরি করেছে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, পুলিশের হিসাবমতেই ফ্যাসিবাদে জড়িত আটক ব্যক্তিদের ৭৩ শতাংশ জামিন পেয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা মহাসমারোহে নির্বাচন করার ঘোষণা দিচ্ছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কোনো প্রচেষ্টাই দৃশ্যমান না, বরং সরকার শীর্ষস্থান থেকে নির্বাচনের আগেই ফলাফল নিয়ে বার্তা দেয়ার এক ধরনের নগ্ন প্রচেষ্টা দেখা গেলো জাতিসংঘের বৈঠক যাত্রায়।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে গণসংযোগ। ১০ অক্টোবর ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরে গণমিছিল। ১২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি হলো- ১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। ২. নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। ৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। ৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।