এডিশন ডেস্ক:
আফগানিস্তানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ ঘোষণা করেছে তালেবান সরকার। এর ফলে দেশটির নারী শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা ‘শেষ ভরসাটুকুও’ হারালেন বলে মন্তব্য করছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, রাজধানী কাবুলের অফিসগুলোর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মোবাইল ইন্টারনেট, স্যাটেলাইট টিভি পরিষেবা এবং কাবুল বিমানবন্দরের ফ্লাইট চলাচলও ব্যাহত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফাহিমা নূরি (ছদ্মনাম) বলেন, “আমাদের শেষ আশা ছিল অনলাইন শিক্ষা। এখন সেটাও নিঃশেষ হয়ে গেছে।” তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকেই নারীদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীদের লেখা বই সরিয়ে ফেলা এবং চাকরির সুযোগ সীমিত করার পর এবার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে গেল।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, আফগানিস্তান এখন ‘সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’-এর মধ্যে আছে, যা গুরুত্বপূর্ণ সেবা কার্যক্রমকেও অচল করে দিয়েছে।
সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের আগে বিবিসি যে সাক্ষাৎকার নিয়েছিল, তাতে নারী শিক্ষার্থীরা হতাশার কথা জানান। তাহকরের বাসিন্দা শাকিবা বলেন, “আমাদের একমাত্র আশা ছিল অনলাইন শিক্ষা। এখন সেটাও শেষ।”
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষক জাবিও বিপাকে পড়েছেন। তার ভাষায়, “দুই দিন আগে ৪৫ জন ছাত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা পরীক্ষা দিতে পারেনি। এটি আমার ও শিক্ষার্থীদের জন্য ভীষণ কষ্টের।”
ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে। মানি চেঞ্জার আনাস বলেন, তার ব্যবসা প্রায় ৯০% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ তার তিন কন্যার পড়াশোনা নিয়ে। “তাদের পড়াশোনার শেষ সুযোগও এখন শেষ। তাদের অসহায় মুখ দেখাটা আমার জন্য সবচেয়ে কষ্টের।”
তালেবান সরকার ইন্টারনেট বন্ধের আনুষ্ঠানিক কারণ না জানালেও দাবি করেছে, এটি অশ্লীলতা রোধের প্রচেষ্টা। তবে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, এটি দেশটিকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নতুন কৌশল।
সূত্র: বিবিসি, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা