ঢাকা অফিস :
সারাদেশে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) থেকে একযোগে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা।
সময়সূচি অনুযায়ী—প্রথম দিনে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন শিক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মাদরাসা বোর্ডের অধীন আলিমের কোরআন মাজিদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) পরীক্ষা নেওয়া হবে। সব বোর্ডের প্রথম দিনের পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হবে দুপুর ১টায়।
এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সারাদেশে এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী। দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রয়েছেন ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী, আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। এ বছর দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত রাখতে নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। প্রশ্নফাঁসের গুজব প্রতিরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং গুজব থেকে পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে গত ২৪ জুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০ নির্দেশনা
শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট, উত্তরপত্র ভাঁজ না করা, শুধুমাত্র সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার, এমসিকিউ ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি না থাকা এবং কেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এছাড়া, তত্ত্বীয়, এমসিকিউ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে। পরীক্ষার্থী শুধুমাত্র প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়েই পরীক্ষা দিতে পারবে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানে নয়, অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরীক্ষার আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষার অংশে উপস্থিতি স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ঢাকা বোর্ডের ৩৩ দফা নির্দেশনা
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য ৩৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে—প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক থাকতে হবে, শিক্ষার্থীদের বসতে হবে তিন ফুট দূরত্ব রেখে, প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর দিন নির্ধারিত সেট অনুযায়ী খোলা যাবে এবং অব্যবহৃত সেট ফেরত পাঠাতে হবে।
প্রশ্নপত্র গ্রহণের সময় সংশ্লিষ্ট থানার ট্যাগ অফিসার ও পুলিশের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, সচেতনতা তৈরিতে মাইক ব্যবহার, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও নকল প্রতিরোধে পোস্টার লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তায় জোর
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা পরিচালনার দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থী, কক্ষ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্টদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশনাও রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে শুধুমাত্র এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে।