কেন জামায়াতকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া দরকার?
“গত ১৯ জুলাই জামায়াত ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ একটি সমাবেশ করেছে। সমাবেশের পর থেকেই বিভিন্ন মিডিয়া ও ব্যক্তিবর্গ এই সমাবেশে ১০০–২০০ কোটি টাকা কিংবা তার চেয়েও বেশি খরচ হয়েছে বলে বিশ্লেষণ করেছেন কিংবা হিসাব কষেছেন।”
“প্রচলিত বড় দলগুলো এ ধরনের একটি সমাবেশ করলে এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কারণ, এখানে স্টেজ, লাইটিং, ক্যামেরা থেকে শুরু করে যাতায়াত, সবখানেই বিশাল ব্যয়ের সম্ভাবনা থাকত। কোনো একটি বিভাগে (যেমন: সাজ-সজ্জা বা ডেকোরেশন) এক কোটি টাকা খরচ হলে, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ন্যূনতম দশ কোটি টাকার চাঁদা তুলতেন বিভিন্নজনের কাছ থেকে। কর্মী-সমর্থকদের আনানোর ক্ষেত্রেও গাড়ি ভাড়া, বিরিয়ানির প্যাকেট ইত্যাদির খরচের চেয়ে কয়েকগুণ চাঁদা তোলা হতো স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে। এরপর হতো ভাগ-বাটোয়ারা। সেক্ষেত্রে দুইশো কোটিতেও শেষ হতো কিনা, বলা কঠিন।”
“কিন্তু জামায়াত কত খরচ করেছে? জামায়াতের আমির হিসাব দিয়েছেন—মোট খরচ হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন কোটি টাকা। ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় খরচ মাত্র সাড়ে তিন কোটি! আর কর্মীরা নিজেদের খরচে ঢাকায় এসেছেন, থেকেছেন, খেয়েছেন। এমন আত্মনিবেদিত, সুশৃঙ্খল সংগঠন দুনিয়ায় কয়টা আছে?”
“ঠিক এইভাবে যদি জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তাহলে কোনো প্রকল্পে যদি ১০০ কোটি টাকার বাজেট হয়, তার পুরোটা জনগণের কাছে পৌঁছাবে। ৩০–৭০ কিংবা ৬০–৪০ ভাগবাটোয়ারার সংস্কৃতি থাকবে না। বরং গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত পুরো বাজেট পৌঁছে যাবে।”
“জামায়াতের আমির ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন—জামায়াতের এমপি ও মন্ত্রীরা ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি কিংবা ঢাকায় প্লট নিতে পারবেন না। আমি নিশ্চিত, জামায়াতের এমপি-মন্ত্রীদের জন্য সংগঠনের ভেতরে যে জবাবদিহির কাঠামো থাকবে, তা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর চেয়েও কঠোর হবে। এ কারণেই আমি মনে করি, এমন একটি নীতিনিষ্ঠ, জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ সংগঠনেরই রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দরকার। বাকিটা জনগণের বিবেচনা ও রায়।”
মতামত বিশ্লেষণ:
মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান
সহকারী অধ্যাপক
তুরস্ক